জলবায়ু পরিবর্তন

জলবায়ু পরিবর্তন

যদিও বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের মাত্র ০.৫৬ শতাংশ নির্গমন করে বাংলাদেশ, তবুও এটা দেশের জলবায়ুর ওপর প্রভাব ফেলছে। তবে, জার্মানওয়াচের ২০২১ সালের গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স (সিআরআই) অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। এ হুমকটি নিতান্তই ভিত্তিহীন কোন কিছু নয়। ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ৩.৭২ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং ১৮৫টি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে।

গ্রামীণফোনে আমরা আমাদের কার্যক্রমের পরিবেশগত প্রভাব কমিয়ে আনার জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের চলমান কর্মসূচি চারটি ক্ষেত্রকে গুরুত্বারোপ করে:

ক. কার্বন নির্গমন কমানো

খ. কর্মী সচেতনতা তৈরি

গ. সবুজায়নের চর্চাকে গ্রহণ এবং

ঘ. সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সোসাইটাল অ্যাডভোকেসি

আইএসও ১৪০০১ অনুসারে ২০১০ সালে ইএমএস গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি। আমাদের ইএমএস নীতি আমাদের পরিবেশগত উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য নির্ধারণ এবং পর্যালোচনা করার জন্য ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে।

২০২১ সালে গ্রামীণফোন ৩৬টি টাওয়ার সাইটকে জেনারেটর+সোলার দিয়ে বাণিজ্যিক শক্তি/গ্রিড বিদ্যুৎ +সোলার হাইব্রিড সাইটগুলোতে রূপান্তর করেছে। এই হাইব্রিড সাইটগুলো বার্ষিক ২৬৩ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2) নির্গমন হ্রাস করে ১৯৭,১০০ লিটার অতিরিক্ত জ্বালানী সঞ্চয় করবে।

২০২১ সালে গ্রামীণফোন লি-আয়ন ব্যাটারির মাধ্যমে ২,৫০০টি সাইট আপগ্রেড করেছে। এই সাইটগুলো এখন গ্রিড অপ্রতুলতার সময় জেনারেটর পাওয়ারের পরিবর্তে ব্যাটারি ব্যাক-আপে চলছে। এই লি-আয়ন ব্যাটারি সল্যুশন কোম্পানিকে ২৯১ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2) নির্গমন কমাতে সাহায্য করবে।

উল্লিখিত কার্যক্রমের পাশাপাশি, গ্রামীণফোন জ্বালানি সাশ্রয়ের মাধ্যমে কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO₂) নির্গমন কমাতে, মূল্যবান সম্পদের ব্যবহার সীমিত করতে, অপারেশনের জন্য ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করতে এবং শেষ পর্যন্ত কর্মচারী এবং স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে বৃহত্তর পরিবেশগত সচেতনতা তৈরি করার জন্য বেশ কিছু প্রোগ্রামও শুরু করেছে।

পানি সংরক্ষণ: আমাদের ওয়াটার ফুটপ্রিন্ট হ্রাস করার পাশাপাশি আমরা যেসব জনগোষ্ঠিতে কাজ করি, সেখানকার পানির প্রাপ্যতা বাড়াতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা প্রতিবছর ব্যবহৃত পানির শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে গ্রামীণফোন পানির ব্যবহার ৬ শতাংশ হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে। 

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: রিডিউস, রিইউজ ও রিসাইকেল (দ্য থ্রি আর’স) নীতি ই-বর্জ্যের পাশাপাশি সাধারণ বর্জ্য কমাতে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে সহায়তা করে। গ্রামীণফোন দক্ষ বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে অগ্রাধিকার দেয় এবং সার্কুলার অর্থনীতিকে সমর্থন করে। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের রিসাইক্লিং পার্টনারের মাধ্যমে ৯১ টনের বেশি ই-বর্জ্য (জিএসএম, মাইক্রোওয়েভ অ্যান্টেনা এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম) পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়েছে। দেশ ও দেশের বাইরে আইএসও ১৪০০০, ওএসএইচএএস ১৮০০০ এবং আর২ মানদণ্ড অনুযায়ী রিসাইক্লিং করা হয়। এছাড়াও, শতভাগ ব্যবহৃত লেড অ্যাসিড ব্যাটারিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলাকে আমাদের অভ্যন্তরীণ কি পারফরমেন্স ইন্ডিকেটর (কেপিআই) হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর গ্রামীণফোন ৮০ হাজারের বেশি পুরাতন লেড অ্যাসিড ব্যাটারি পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে।

grameenphone